বগলের কালো দাগ দূর করার উপায়।

সুন্দর, মসৃণ ও স্বাস্থ্যকর স্কিন নারীর আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলে। আমরা স্কিনকে সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর রাখতে রেগুলার লাইফ স্টাইলে অনেক নিয়ম কানুন মেইনটেইন করে চলি। শরীরের অন্যান্য অংশের যত্ন নিতে গিয়ে আমরা অনেকেই ভুলে যাই বগলের যত্নের কথা। এটাও শরীরের সৌন্দর্যের একটি অন্যতম অংশ।বগলে বা আন্ডার আর্মের নিচে যদি,কালো ছোপ ছোপ দাগ হয় কিংবা ওই অংশ কালচে হয়ে যায় তাহলে এর কারনে আপনার সামগ্রিক সৌন্দর্যহানি হওয়ার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসও কমে যাবে। যদিও পোশাকের কারণে শরীরের এই অংশ বেশিরভাগ সময়ই ঢাকা থাকে কিন্তু গরমের দিনে যখন স্লেভলেস ড্রেস পড়তে মন চায় তখন , বগলের নিচে কালো দাগ থাকার কারণে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে হয়।

বিভিন্ন কারণে বগলের‌ নিচে কালো দাগ সৃষ্টি হয় যেমন- শেভিং, অতিরিক্ত ডিওডোরেন্ট ব্যবহার, টাইট ফিট বা চাপা পোশাক পরা, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, হরমোনাল ইমব্যালেন্সড ইত্যাদি। যেসব কারণে বগলের‌ নিচে কালো দাগ হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বগলের নিচে কালো দাগ কেন হয়? এই ব্লগটি পড়ে আসুন।

তবে এ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। কারণ এই ব্লগে আমি আপনাদের বগলের নিচে কালো দাগ দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানাবো। এগুলো সঠিক ভাবে মেনে চললে খুব সহজেই এই কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেই।

সেভিং বা হেয়ার রিমুভার ক্রিম এর পরিবর্তে ওয়াক্সিং করূন

আমরা সচরাচর বগলের চুল পরিষ্কার করতে সেভিং বা হেয়ার রিমুভিং ক্রিম ব্যবহার করি যা বগলের নিচে কালো দাগ হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ। তাই বগলের চুল পরিষ্কার করতে সেভিং এর পরিবর্তে ওয়াক্সিং করুন। ওয়াক্সিং এর মাধ্যমে বগলের চুল ভেতর থেকে গোঁড়াসহ উঠে আসবে এবং বগলের নিচে এক্সফোলিয়েটিং এর মতো মৃত কোষ ও রিমুভ করবে। যদিও এটা আপনাকে কিছুটা ব্যাথা দিবে। কিন্তু এটি ব্যবহারের মাধ্যমে বগলের নিচে পড়া কালো দাগ আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে।

ডিওডোরেন্ট কম ব্যবহার করুন

Deodorant

আমরা আগের ব্লগে জেনেছি বেশি পরিমাণে ডিওডোরেন্ট ব্যবহারের কারণে বগলের নিচে কালো দাগ পড়ে। তবে , এটি যদি ব্যবহার করতেই হয় তাহলে এটি শরীরে সরাসরি না লাগিয়ে কাপড়ে লাগান।

অলিভ অয়েল ও ব্রাউন সুগার

ত্বকের যেকোনো কালচে দাগ বা কালো দাগ দূর করতে অলিভ অয়েল খুবই কার্যকর। এছাড়াও অলিভ অয়েল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। বগলের কালচে দাগ দূর করার জন্য অলিভ অয়েল দিয়েও ঘরোয়া কিছু টোটকা বানানো যায়। এক্ষেত্রে একটি বাটিতে এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল নিয়ে এতে এক টেবিল চামচ ব্রাউন সুগার নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার এই মিশ্রণটি বগলে লাগিয়ে স্ক্রাব করে পাঁচ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দুইবার এই ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করবেন।

বেকিং সোডা ও গোলাপজল

বেকিং সোডা হলো একটি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর। যা ত্বকের মৃত চামড়া দূর করতে সাহায্য করে এবং গোলাপজল ত্বককে রাখে সুথিং ও ময়েশ্চারাইজড। এই দুইটি উপকরণ দিয়েও স্ক্রাব বানানো যায়। এই স্ক্রাব বানাতে একটি পাত্রে নিতে হবে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও এক টেবিল চামচ গোলাপজল এবার এই উপাদানগুলো একত্রে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই স্ক্রাবটি বগলের নিচে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন। এটি ১০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই স্ক্রাবটি সপ্তাহে দুই বার ব্যবহার করলে বগলের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।

আলু ও লেবুর রস

potato and lemon

আলু ও লেবুর রস ত্বকে প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে। এই দুইটি উপাদান ত্বকের কালো দাগ দূর করতে খুবই কার্যকর। লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড যা ত্বকের মরা চামড়া রিমুভ করে ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যাদের বগলের নিচ কালচে হয়ে গেছে বা কালো দাগ পড়েছে তারা গোসলের আগে অর্ধেক পরিমাণ লেবুর স্লাইস নিয়ে বা লেবুর রস দিয়ে বগলের নিচে ২-১ মিনিট ঘঁষে ধুয়ে ফেলবেন। এছাড়াও কালো দাগ দূর করতে লেবু ও আলুর রস মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। এই মিশ্রণটি তৈরি করতে- একটি বাটিতে এক চা চামচ লেবুর রস ও একটি মাঝারি সাইজের আলু ছেঁচে কিংবা ব্লেন্ড করে এর রস নিয়ে সাথে, এক চা চামচ চিনি বা চালের গুড়া নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এবার এই মিশ্রণটি বগলের নিচে ২-৩ মিনিট ম্যাসাজ করে লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।

বগলের নিচে হওয়া কালো দাগ দূর করা খুব কঠিন বিষয় না। রেগুলার লাইফে কিছু নিয়ম মেইনটেইন যেমন- সেভিং বা হেয়ার রিমুভার ক্রিম এড়িয়ে চলা, ডিওডোরেন্ট বা পারফিউম সরাসরি বগলের নিচে ব্যবহার না করা, টাইট ফিট জামা পরিহার করা এবং যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে উপরে উল্লেখিত কিছু প্রাকৃতিক ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে চললে , আশা করি খুব সহজেই বগলের দাগ দূর হয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন