মুখে ব্রণ উঠা একটি সাধারণ সমস্যা, বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী এবং তরুণদের মধ্যে। তবে যেকোনো বয়সেই ব্রণ হতে পারে। ব্রণ শুধু চেহারার সৌন্দর্যকেই নষ্ট করে না, এটি মানসিক চাপ ও হতাশার কারণ। তাই ব্রণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা এবং সঠিক যত্ন নেওয়া জরুরি।
ব্রণ কেন হয়?
ব্রণ হওয়ার প্রধান কারণ হলো ত্বকের তেল গ্রন্থি (সেবেসিয়াস গ্ল্যান্ড) থেকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ। এই তেল ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দেয়, যার ফলে ব্যাকটেরিয়া জমে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে। ব্রণ হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ হলো:
হরমোনাল পরিবর্তন: বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে, গর্ভাবস্থায় বা মাসিক চক্রের সময়।
অতিরিক্ত তেলযুক্ত ত্বক: ত্বক বেশি তেল উৎপাদন করলে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
বদ্ধ ছিদ্র: ময়লা, ধুলোবালি এবং মেকআপ ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দেয়।
খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড এবং চিনিযুক্ত খাবার ব্রণ বাড়াতে পারে।
মানসিক চাপ: স্ট্রেস ত্বকের সমস্যা বাড়িয়ে দিয়ে।
জেনেটিক কারণ: পরিবারে কারো ব্রণের সমস্যা থাকলে তা বংশানুক্রমে আসতে পারে।
ব্রণ উঠলে কি করণীয়?

ব্রণ উঠলে করণীয় বিষয়গুলো জেনে নিন:
ত্বক পরিষ্কার রাখুন:
- দিনে দুইবার হালকা ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- তেলযুক্ত ত্বকের জন্য অয়েল-ফ্রি বা নন-কমেডোজেনিক ক্লিনজার ব্যবহার করুন।
- অতিরিক্ত স্ক্রাবিং বা রুক্ষ সাবান ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
ব্রণ চাপা বা খোঁচানো থেকে বিরত থাকুন:
- ব্রণ চাপলে বা খোঁচালে সংক্রমণ ছড়াতে পারে এবং স্থায়ী দাগ হয়ে যেতে পারে।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন:
- ত্বক শুষ্ক হলে তা আরও বেশি তেল উৎপাদন করে। তাই হালকা ও অয়েল-ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন:
- সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। প্রতিদিন SPF সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
- যদি ব্রণের সমস্যা গুরুতর হয় বা ঘরোয়া উপায়ে না সারে, তবে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তারা প্রেসক্রিপশন মেডিকেশন বা ট্রিটমেন্ট দিতে পারেন।
ব্রণ প্রতিরোধের উপায়:
- নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখুন।
- মেকআপ ব্যবহারের পর ভালো করে ক্লিনজিং করুন।
- তেলযুক্ত হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
- তোয়ালে, বালিশের কভার নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
- মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করুন।
শেষ কথা:
ব্রণ একটি সাধারণ সমস্যা, তবে সঠিক যত্ন ও পরিচর্যার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। মনে রাখবেন, ধৈর্য্য ধরে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।